ব্রেকিং নিউজ

আতঙ্ক নয় সচেতনতার মাধ্যমেই সম্ভব প্রতিরোধ। করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত কোন জিজ্ঞাসা থাকলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের “স্বাস্থ্য বাতায়ন” এ গ্রামীণফোন গ্রাহকরা ফ্রি কল করুন ১৬২৬৩ নম্বরে। -করোনা ভাইরাসের আপডেট জানতে এখানে ক্লিক করুন-

সুজানগরে কৃষকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধান কিনলেন এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও



এম এ আলিম রিপনঃ ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সুজানগর উপজেলার কৃষকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে সরকারি মূল্যে ধান কিনলেন উপজেলা ধান-চাল ক্রয় কমিটির উপদেষ্টা পাবনা-২ আসনের এমপি আহমেদ ফিরোজ কবির, সুজানগর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীন এবং উপজেলা ধান-চাল ক্রয় কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুজিৎ দেবনাথ। বুধবার (২৯মে) উপজেলার ভায়না, দূর্গাপুর, দুলাই দুলাই ইউনিয়নের চিনাখড়া, রাণীনগর ইউনিয়নের সারীরভিটা, হাটখালী ইউনিয়নের কামালপুর ও মানিকহাট ইউনিয়নের বোনকোলা সহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে এ ধান কেনেন তারা।

চলতি বোরো মৌসুমে বাজারে যখন ধানের দাম ৫২০টাকা থেকে ৬০০ টাকা মণ সে সময় সুজানগর উপজেলার ধান চাষিরা সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে বাড়ি থেকেই ১০৪০ টাকা মণ ধান বিক্রি করতে পেয়ে খুশি।

উপজেলার শারীরভিটা গ্রামের কৃষক বকুল শেখ বলেন বোরো মৌসুমের শুরুতেই ধান কাটা শ্রমিক সঙ্কট দেখা দেয়। ৬শ’থেকে ৭শ’টাকায় একজন ধান কাটা শ্রমিক কিনতে হয়েছে তাদেরকে। অথচ বাজারে নতুন ধানের দাম সর্বোচ্চ ৬০০টাকা থাকায় চরম হতাশার মধ্যে পড়েছিলেন তারা। তারপরেও  অন্যান্য  বছরের মত মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের হাতে চরম হয়রানি ও আর্থিক ক্ষতির  সম্মুখীন হতে হয়নি চাষীদের। তারা ন্যায্যমূল্যেই ধান বিক্রির সুযোগ পেয়ে খুশি। উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের কৃষক মোঃ রেজা মন্ডল জানান সুজানগরের বেশিরভাগ কৃষক  সরকারি মূল্যে  ধান বিক্রির সুযোগ না পাওয়ায় এখন চরম হতাশার মধ্যে পড়েছেন। তারা ধান ক্রয়ের পরিমাণ আরো বাড়ানোর জন্য  সরকারের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে। 

ভায়না গ্রামের কৃষক আমিন উদ্দিন বলেন পাবনা-২ আসনের এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনওর উপস্থিত থেকে ধান কেনার কথা শুনে তিনি কয়েক মণ ধান বিক্রি করেছেন। এবং সরকার নির্ধারিত মূল্যে তিনি ধানের দাম পেয়েছেন। আর ধানের এমন মূল্য পেলে কৃষকরা অনেক উপকৃত হবে। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক পারভেজ আনোয়ার জানান  এবারে ২০১৯ সালের ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত এই উপজেলার কার্ডধারী কৃষকেরা প্রতি কেজি ২৬ টাকা দরে সরকারের কাছে এ ধান বিক্রয় করতে পারবে। আর প্রতিটি কৃষক সর্বনিম্ন ১২০ কেজি থেকে শুরু করে ৩ মেট্রিক টন পর্যন্ত ধান বিক্রয় করতে পারবে।


 সুজানগর উপজেলা ধান-চাল ক্রয় কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুজিৎ দেবনাথ জানান  এ বছর ১৪৩ মেট্রিক টন বোরো ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে সরকারীভাবে ধান সংগ্রহ করা হচ্ছে। সুজানগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীন বলেন সুজানগরে কার্ডধারী কৃষকের সংখ্যা রয়েছে  প্রায় ৩৭ হাজার। আর এই উপজেলায় এবার ৪,২৩০ হেক্টর জমিতে এবারে বোরো ধান উৎপাদন হয়েছে।ফলে গ্রামে গ্রামে গিয়ে  ধান কেনা হলেও  বেশিরভাগ কৃষকের  নিকট থেকেই  ধান ক্রয় হয়ত সম্ভব হচ্ছেনা।তারপরও এর মধ্যে থেকেই অত্যন্ত স্বচ্ছতার ভিত্তিতে প্রান্তিক পর্যায়ের প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকেই ১৪৩ মেট্রিক টন  সংগ্রহ করা হবে।

পাবনা-২ আসনের এমপি ও উপজেলা ধান ক্রয় কমিটির উপদেষ্টা আহমেদ ফিরোজ কবির বলেন কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার সব সময় তৎপর রয়েছে। এছাড়া তিনি নিজে এলাকায় উপস্থিত থেকে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার তদারকি করবেন। এবং কোনো ব্যবসায়ী কৃষক সেজে ধান বিক্রির চেষ্টা করলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। 

ধান ক্রয়কালে এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক পারভেজ আনোয়ার, খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আলী মিঞা, দুলাই ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম শাহজাহান, মানিকহাট ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম,হাটখালী ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, ভায়না ইউপি চেয়ারম্যান আমিন উদ্দিন, উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস ছাত্তার, আ’লীগ নেতা সাইফুল ইসলাম সহ স্থানীয় কৃষকেরা উপস্থিত ছিলেন। 



No comments

Powered by Blogger.