ব্রেকিং নিউজ

আতঙ্ক নয় সচেতনতার মাধ্যমেই সম্ভব প্রতিরোধ। করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত কোন জিজ্ঞাসা থাকলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের “স্বাস্থ্য বাতায়ন” এ গ্রামীণফোন গ্রাহকরা ফ্রি কল করুন ১৬২৬৩ নম্বরে। -করোনা ভাইরাসের আপডেট জানতে এখানে ক্লিক করুন-

ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন কি ভেঙ্গে যাবে সুজানগরের অভির!



এম এ আলিম রিপনঃ ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে মেডিকেল কলেজের  এমবিবিএস কোর্সের প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় মেধাক্রমে ২১১০তম হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন সুমাইয়া সুলতানা অভি। 

শিক্ষা জীবনজুড়েই আর্থিক দুশ্চিন্তা ছিল অভির নিত্যসঙ্গী। মেধার জোরে সব বাধা জয় করে মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেলেও আবার সেই আর্থিক দুশ্চিন্তাই তাকে ঘিরে ধরেছে। ভর্তির সুযোগ পেলেও বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থ। কোথায় পাবেন অর্থ, কে দেবেন অর্থের যোগান এই শঙ্কায় দিন কাটছে দরিদ্র পরিবারের মেয়ে অভির।

অভি পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার সাতবাড়ীয়া ইউনিয়নের শ্যামনগর গ্রামের আব্দুল বাতেন ও জোমেলা খাতুনের মেয়ে। দুই সন্তানের মধ্যে অভি বড়। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি অভির পিতা সাতবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজে মাত্র এগারো হাজার ছিয়াত্তর টাকা বেতনে হিসাবরক্ষক হিসাবে চাকুরি করেন। অভির পিতার জায়গা জমি বলতে তেমন কিছু নেই। বাড়িতে রয়েছে টিনের ঘর।পরিবারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অভির পিতার এর মধ্যে অভির মেডিকেলে ভর্তি ও পড়ার খরচ যোগানোর সামর্থ্য তার বাবার নেই বললেই চলে। 

অভির পিতা আব্দুল বাতেন বলেন সংসার চালানো যেখানে দায়, সেখানে মেয়ের মেডিকেলে লেখাপড়ার খরচ আমার কাছে দুঃস্বপ্ন। তবে স্বপ্ন দেখি আমার মেয়ে ডাক্তার হবে।ভর্তির সময় শেষ হতে চলেছে টাকার অভাবে মেয়েকে ভর্তি করাতে পারছি না। 

অভি ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী, সে সাতবাড়িয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং সাতবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। ছোট থেকেই তার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন ছিল। স্বপ্ন পূরণের জন্য তিনি অধিকাংশ সময়ই লেখাপড়ার পিছনে ব্যয় করেছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তিনি মেডিক্যালে ভর্তির টাকা জোগাড় করতে পারেননি। স্বপ্ন পূরণের এতো কাছে এসেও টাকার অভাবে স্বপ্ন ভেঙ্গে যাবে তা মেনে নিতে পারছেন না অভি। 

অভি জানান কলেজে পড়াশুনা করা অবস্থায় আর্থিক দিক সহ অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা করতেন কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল বাছেত বাচ্চু স্যার। আর এ জন্য স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন অভি। সাতবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল বাছেত বাচ্চু বলেন ১৯৬৬ সালে কলেজ প্রতিষ্ঠা হলেও গত ৫২ বছরে এই কলেজ থেকে কোন শিক্ষার্থী মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পায়নি।

কিন্তু এবারে  কলেজ থেকে অভি সে সুযোগ পাওয়ায় আমরা গর্বিত। এবং সে আমাদের কলেজের মুখ উজ্জল করেছে।তিনি আরো জানান অভি দরিদ্র পরিবারের সন্তান হলেও সে অত্যন্ত মেধাবী একজন ছাত্রী। প্রশাসন সহ সমাজের বিত্তবানরা নজর দিলে  অভির ডাক্তারি পড়া আটকাবে না। 

এদিকে স্থানীয় এলাকাবাসী জানায় অভির পিতা আব্দুল বাতেন ছোটকাল থেকেই অনেক কষ্ট করে বড় হয়েছেন। ৬ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে আব্দুল বাতেন ছিল মেঝ। পিতা দরিদ্র হওয়ায় আব্দুল বাতেন নিজে বাজারে পান বিক্রি করে ছোট ভাইবোনদের লেখাপড়ার খরচ দিতেন।  

No comments

Powered by Blogger.