ব্রেকিং নিউজ

আতঙ্ক নয় সচেতনতার মাধ্যমেই সম্ভব প্রতিরোধ। করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত কোন জিজ্ঞাসা থাকলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের “স্বাস্থ্য বাতায়ন” এ গ্রামীণফোন গ্রাহকরা ফ্রি কল করুন ১৬২৬৩ নম্বরে। -করোনা ভাইরাসের আপডেট জানতে এখানে ক্লিক করুন-

সুজানগরে সরকারি নির্দেশনা মেনে মসজিদে মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত


এম এ আলিম রিপনঃ নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব ও করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ থেকে সুরক্ষায় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুজানগর পৌরসভার কেন্দ্রীয় বাজার জামে মসজিদ সহ অন্যান্য মসজিদে পবিত্র ঈদুল  ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

সুজানগর পৌরসভার তত্বাবধানে প্রতিবছর সুজানগর সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হলেও ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা মোতাবেক  এবারে সুজানগর পৌরসভার তত্বাবধানে  সুজানগর বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, মসজিদপাড়া জামে মসজিদ ও খন্দকারপাড়া জামে মসজিদে ঈদের পৃথক তিনটি  জামাত অনুষ্ঠিত হয়।  


সোমবার (২৫ মে) পৌরসভার তত্বাবধানে সুজানগর বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান এ জামাতে সুজানগর পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ আব্দুল ওহাব, সুজানগরের সাবেক মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল হাই সহ অন্যান্য  ধর্মপ্রাণ মসুল্লিগন অংশগ্রহন করেন। নামাজে ইমামতি করেন হাফেজ মাওলানা আলহাজ মোঃ রফিকুল ইসলাম। 

ঈদের আগের দিন করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ঈদুল ফিতরের নামাজে মুসল্লিদেরকে মাস্ক পরিধান করে আসতে এবং সরকারি সকল নির্দেশনা মেনে মসজিদে ঈদের জামাত করতে সুজানগর পৌরসভার পক্ষ থেকে মাইকিং এর মাধ্যমে  সকলকে অনুরোধ করা হয়।  

এছাড়া ঈদের দিনে সুজানগর প্রশাসনের কর্মকর্তাগন উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদে, থানা পুলিশ থানা চত্বর মসজিদে,নিজ গ্রাম চরসুজানগরের স্থানীয় মসজিদে সুজানগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীন ও পাবনা-২ আসনের এমপি আহমেদ ফিরোজ কবির তার নিজ গ্রাম উপজেলার সাতবাড়ীয়ার তারাবাড়ীয়া মসজিদে ঈদের জামাতে নামাজ আদায় করেন। 

প্রতিটি জামাত শেষে খুতবা পেশ করা হয়। এরপর অনুষ্ঠিত হয় দোয়া ও মোনাজাত। দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা, সম্প্রতি বৈশ্বিক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও নিহতদের জন্য দোয়া, সব উম্মতে মোহাম্মদীর গুনাহ মাফ চাওয়া সহ সেকোন বিপদ থেকে দেশকে হেফাজতের জন্য প্রার্থনা করা হয়। মোনাজাতে করোনামুক্ত সুন্দর ও শান্তির পৃথিবী ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশা সহ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে দু’হাত তুলে দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনার পর উৎসবের দিনে কান্না করেন মুসুল্লিরা।

এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন মসজিদে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় সব ধরণের বালা-মুসিবত থেকে সুরক্ষায় প্রার্থনা করা হয় মহান আল্লাহর দরবারে। এদিকে স্বাস্থ্যাবিধি মেনে ঈদ জামাত, জামাত শেষে কোলাকুলি ও হাত মেলাতে মানা থাকায় সেগুলো মেনেই  ঈদের জামাত আদায় করেছেন সুজানগরের মুসল্লিরা।  

সরকারি নির্দেশনা মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে কাতার করতে হয়েছে বলে ভেতরে জায়গা না পেয়ে মসজিদের বাইরের প্রাঙ্গনে, খোলা জায়গাতেও অনেককে নামাজে দাঁড়াতে দেখা গেছে। তবে অনেক মুসুল্লী শতভাগ শারীরিক দূরত্ব  বজায়  রাখতে ঈদগাহ মাঠেই ঈদের জামাতের ব্যবস্থা থাকলে ভাল হতো বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। কারণ হিসাবে তারা বলেন অন্যান্য নামাজের চেয়ে এমনিতেই ঈদের নামাজে অনেক বেশি সংখ্যক মুসুল্লী অংশগ্রহন করে থাকে। আর তাই মসজিদের স্বল্প জায়গায় এই দূরত্ব বজায় রাখাটা অনেক কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল। করোনাভাইরাস অতি সংক্রমণ বলে এবার বেশ কিছু বিধি নিষেধ মেনে নামাজ পড়তে হয়েছে সবাইকে। 

ঈদ জামায়াতে শিশু ও বৃদ্ধদের  অংশ না নিতে  বলা হলেও  দেখা গেছে অনেকে সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে ঈদের নামাজে এসেছেন। প্রবীণদেরও বিভিন্ন মসজিদে নামাজ পড়তে  দেখা গেছে। এ ব্যাপারে  সুজানগরের আব্দুল মজিদ নামে এক প্রবীণ ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করতেই সংবাদকর্মীদের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন নামাজ নিয়ে আপনাদের এত চুলকানি কেন। 

ঈদের আগের দিনও সুজানগর বাজারে হাজার হাজার মানুষ মার্কেটে কেনাকাটা করল। তখন প্রশাসন কোথায় ছিল।কই আপনারাও তো এ বিষয়ে কিছু লিখলেন না। বর্তমানেও শত শত মানুষ সুজানগর বাজার সহ বিভিন্ন বাজারে সরকারি নির্দেশনা না মেনে ও শারীরিক দূরত্ব বজায় না রেখেই কেনাকাটা ও চলাচল করছে, আইন সবার জন্য সমান তাই আমার অনুরোধ আগে তাদের বিরুদ্ধে কিছু ব্যবস্থা গ্রহন করতে বলেন প্রশাসনকে। 

নামাজ শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে সুজানগর বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা আলহাজ মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন আমরা মানবজাতি বর্তমানে কঠিন এক দূর্যোগকালীন সময় অতিবাহিত করছি। মহান আল্লাহ কখন কার কোথায় মৃত্যু নির্ধারণ করে রেখেছেন আমরা কেউই বলতে পারিনা। তাই এ সময়ে আমরা যেন বেশি বেশি আল্লাহকে স্মরণ করি এবং সকল ধরণের গীবত, চোগলখোরী, মিথ্যাচার সহ সকল ধরণের পাপ কাজ থেকে  দূরে থাকি। 

সুজানগর পুকুরপাড় জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা আলহাজ মোঃ আবু ইউসুফ ৪৮২৩ নং হাদিসের বর্ণনা উল্লেখ করে বলেন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন চোগলখোর বা নিন্দাকারী জান্নাতে যাবেনা। (বুখারী ও মুসলিম)।
  • সূরা আল বাকারাহ এর  ৪২ নং আয়াত বর্ণনা করে তিনি বলেন মহান আল্লাহতায়ালা বলেছেন মিথ্যার রঙে রাঙিয়ে সত্যকে সন্দেহযুক্ত করো না এবং জেনে বুঝে সত্যকে গোপন করার চেষ্টা করোনা।
  • সূরা আল হুজরাতের ৬ নং আয়াতের বর্ণনা করে তিনি আরো বলেন মহান আল্লাহতায়ালা বলেছেন হে ঈমান গ্রহনকারীগণ, যদি কোন ফাসেক তোমাদের কাছে কোন খবর নিয়ে আসে তাহলে তা অনুসন্ধান করে দেখ। এমন যেন না হয় যে, না জেনে শুনেই তোমরা কোন গোষ্ঠীর ক্ষতি করে বসবে এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হবে। 
তাই তিনি বলেন আমরা সকলে যেন  ন্যায় ও সত্যের উপর থেকে আরো বেশি বেশি আমল করতে পারি মহান আল্লাহতায়ালা আমাদের সে তৌফিক দান করুন। আমিন।

No comments

Powered by Blogger.