ব্রেকিং নিউজ

আতঙ্ক নয় সচেতনতার মাধ্যমেই সম্ভব প্রতিরোধ। করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত কোন জিজ্ঞাসা থাকলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের “স্বাস্থ্য বাতায়ন” এ গ্রামীণফোন গ্রাহকরা ফ্রি কল করুন ১৬২৬৩ নম্বরে। -করোনা ভাইরাসের আপডেট জানতে এখানে ক্লিক করুন-

ঈদে মন ভাল নেই সুজানগরের কৃষক পরিবারের


এম এ আলিম রিপনঃ সূর্যের প্রখরতা খা খা করছে চারপাশ। প্রচন্ড গরম ও দাবদাহ অতিষ্ট জনজীবন। এরই মধ্যে বিপনী বিতানগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। সুজানগর উপজেলার বিভিন্ন বাজারের ফুটপাত ও ছোট খাটো দোকান থেকে শুরু করে অভিজাত বিপনী বিতানগুলোতে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। 

কিন্তু বর্তমানে  ধান এবং পেঁয়াজ সহ অন্যান্য কৃষি পণ্যের পর্যাপ্ত না থাকায় পরিবারের জন্য পছন্দের পোষাক কিনতে না পারায় এবারের ঈদে মন ভাল নেই সুজানগরের কৃষক পরিবারের মানুষদের। সুজানগরের বোনকোলা গ্রামের  আব্দুল বাতেন নামে এক কৃষক মন খারাপ করে বলেন যারা চাকুরী করে প্রতি মাসে বেতন পাচ্ছেন এবং ব্যবসা করছেন এবারের ঈদ হচ্ছে তাদের জন্য। আমাদের মত গরিব কৃষক পরিবারের জন্য নয়। কারণ হিসাবে তিনি জানান এক মণ ধান বিক্রি করলে হচ্ছে সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা আর পেঁয়াজ বিক্রি করলে হচ্ছে সর্বোচ্চ ৮০০টাকা এই টাকা নিয়ে নিয়ে পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার তুলে দেব না ঈদের কেনাকাটাই করবো । উপজেলার খলিলপুর গ্রামের কৃষাণী ছালেহা খাতুন জানান ঈদে ছেলে মেয়েরা বায়না ধরছে নতুন পোষাক কিনে দেবার জন্য কিন্তু ফসলের দাম না পাওয়ায় তাদের পছন্দের পোষাক হয়ত কিনে দিতে পারবো না এবারে।

এদিকে  সুজানগর বাজারের কেনাকাটার অন্যতম প্রিয় জায়গা মৌসুমী বস্ত্র বিতান, বেনু এন্ড ব্রাদার্স, হাজী মার্কেট , খান প্লাজা ও জোয়াদ্দার মার্কেট। এবার ঈদ উৎসব রাঙাতে দোকানিরা শাড়ি, থ্রিপিচ সহ এনেছেন বাহারি সব পোশাক। কেনাকাটা করতে অনেকেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আসছেন মার্কেটে। ঘুরে ঘুরে খুঁজে নিচ্ছেন নিজের পছন্দের জামা-কাপড় ও জুতো, প্রসাধনীসহ প্রয়োজনীয় জিনিস। ব্যবসায়ীরা জানান কেনাকাটা করতে চাকুরীজিবী ও ব্যবসায়ী পরিবারের সদস্যদের মানুষেরাই বেশি আসছেন। আর কেনাকাটা ঈদের আগের দিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ তাদের। 

এবারের ঈদে সবচেয়ে বেশি মানুষের সমাগম দেখা যায় পৌর বাজারের অভিজাত বিপনীবিতান মৌসুমী বস্ত্র বিতানে। এখানে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা সরকারী এক কর্মকর্তা জানান এই মৌসুমী বস্ত্র বিতানে ভাল মানের ছোট থেকে বড় সব ধরণের নারী পুরুষের পোষাক পাওয়া যায় এবং দামও সাধ্যের মধ্যে হয় তাই এখান থেকেই ঈদের কেনাকাটা করে থাকি। সুজানগর বাজারের বিশিষ্ট কাপড় ব্যবসায়ী ও মৌসুমী বস্ত্র বিতানের মালিক কুতুব উদ্দিন বলেন বর্তমানে গ্রাহকের ভিড় বাড়ছে । আর দেড় থেকে হাড়াই  হাজার টাকা দামের পাঞ্জাবি প্রতি ছেলেদের আগ্রহ বেশি আর মেয়েদের আগ্রহ ১ থেকে ৩ হাজার টাকা দামের থ্রীপিচ। এদিকে ছোটদের পাশাকের দোকান গুলোতে উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তিন ছেলের জন্য কাপড় কিনতে মার্কেটে এসেছেন সুজানগর পৌরসভার কাঁচারীপাড়া এলাকার গৃহিনী মাহফুজা খাতুন জানান ছেলেদের জন্য বিভিন্ন দোকানে ঘুরে ঘুরে কাপড় দেখছি। কাপড়ের দাম একটু বেশি বলে মনে হচ্ছে। মোঃ লুৎফর রহমান জানান ছেলেমেয়েদের পছন্দের জামাকাপড় কিনতেই হবেই। দাম বিবেচনা বিষয় নয় বলে তিনি মনে করেন। ঈদ মার্কেট করতে আসা ভবানীপুর এলাকার মোঃ সাইদুর রহমান, আফজাল হোসেন ও আরিফুল ইসলাম আলম বলেন ঈদ তো ছোট ছেলেমেয়েদের তাই ওদের শখ পূরণ করতেই যত চেষ্টা। 

প্রচন্ড গরমের কারণে দিনের তুলনায় সন্ধায় কেনাকাটা বাড়ে বলে জানিয়েছেন দোকানদারা। তারা জানান সারাদিন তাদের দোকানে যা কেনা বেচা হয় সন্ধ্যার পর তার চেয়ে বেশি হয়। সুজানগর থানা ইন্সপেক্টর (তদন্ত) অরবিন্দ সরকার বলেন মানুষ যাতে স্বস্তি নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে পারে এ জন্য পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিপনিকেন্দ্রগুলোর আশপাশে ও বাজারের গুরুত্বপুর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে।

পাবনা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ফরহাদ হোসেন জানান ছিন্তাই, চাঁদাবাজি বা জাল টাকার কারবারির বিরুদ্ধে আমরা তৎপর রয়েছি। ঈদেও আগে পুলিশের টহল আরো বৃদ্ধি করা হবে। ঈদকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে মার্কেটগুলোতে জোরদার করা হয়েছে পুলিশি নজরদারি। কোন প্রকার অপ্রতীকর ঘটনা এড়াতে টহল পুলিশের পাশাপাশি কাজ করছেন সাদা পোশাকের পুলিশ।



No comments

Powered by Blogger.