ব্রেকিং নিউজ

আতঙ্ক নয় সচেতনতার মাধ্যমেই সম্ভব প্রতিরোধ। করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত কোন জিজ্ঞাসা থাকলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের “স্বাস্থ্য বাতায়ন” এ গ্রামীণফোন গ্রাহকরা ফ্রি কল করুন ১৬২৬৩ নম্বরে। -করোনা ভাইরাসের আপডেট জানতে এখানে ক্লিক করুন-

সুজানগরের পদ্মার চরে ফসলের বাম্পার ফলন হলেও পানিতে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় কৃষকেরা

সুজানগরের পদ্মার চরে ফসলের বাম্পার ফলন হলেও পানিতে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় কৃষকেরা

এম এ আলিম রিপনঃ সুজানগর উপজেলার পদ্মার জেগে ওঠা চর এবার কৃষকদের আশার প্রতিফলন ঘটিয়েছে। চরের উপর নানা রকম ফসল ও সবজি চাষের কারণে চারদিকে এখন সবুজ আর সবুজ। পদ্মার বর্ষা মৌসুমে এক রকম রুপ আর শুষ্ক মৌসুমে তার আরেক চেহারা দেখা যায়।

আর এখন পদ্মার পাড় সবুজে ছেঁয়ে গেছে। উপজেলার পদ্মার চর এলাকা চরভবানীপুর, চরসুজানগর, নাজিরগঞ্জ, সাগরকান্দি, চর খলিলপুর, চর লক্ষিপুর সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় বর্তমানে চরের উপর কৃষকেরা ব্যাপক বাদাম চাষ করেছেন। 
সুজানগরের পদ্মার চরে ফসলের বাম্পার ফলন হলেও পানিতে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় কৃষকেরা

এছাড়াও বাঙ্গি,পাট,ধান, ও সবজির ক্ষেতও রয়েছে। তবে বাদাম সহ অন্যান্য ফসল ভাল হলেও বর্তমানে পদ্মার পানি বৃদ্ধি পেতে থাকায় ফসল তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছে এ অঞ্চলের কৃষকেরা। 

সুজানগর উপজেলার প্রায় ৩০ কিলোমিটার অংশে রয়েছে পদ্মা নদী। আর এই বিশাল জায়গা জুড়ে যেখানে চর জাগছে সেখানে তাকালেই চোখে পড়বে বাদাম সহ অন্যান্য ফসলের ক্ষেত্র।

এবার চরের উপর দিয়ে ফসলও অনেক ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছে এখানকার কৃষকরা।তারা আরো জানিয়েছে যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে তাহলে আমারা ভালো ফসল পাবো।আর এখন পদ্মার সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিনিই দুর-দুরান্ত থেকে পদ্মার পাড়ে আসছে মানুষ। 

উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের চরবিশ্বনাথপুর গ্রামের বাদাম চাষী আবুল হাশেম বলেন, এবার তিনি চরের উপর ১২ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছেন। বাদাম গাছও অনেক সুন্দর হয়েছে। কিন্তু যেভাবে পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে ফসল তলিয়ে যাওয়ার চিন্তায় রয়েছি। 

তিনি আরো বলেন আগামী ২ সপ্তাহ পর থেকে বাদাম তোলা শুরু করবে এ অঞ্চলের কৃষকেরা। তবে পদ্মার পানি এভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকলে এখনই জমি থেকে কাঁচা বাদাম উঠিয়ে ফেলতে হবে। চর ভবানীপুর গ্রামের কৃষক ইউনুস আলী বলেন প্রতি বিঘা বাদাম চাষ করতে খরচ হয় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা ।আর প্রতি বিঘায় তিনি বাদাম পাবেন সর্বনিম্ন ১৫ মণ থেকে সর্বোচ্চ ২০ মণ পর্যন্ত। তিনি আরো বলেন চরের উপর ফসল ভালো হয় এবং খরচ কম হয়।তাই ফসল চাষ করে লাভবান হওয়া যায়।

একই গ্রামের কৃষক মিলন শেখ বলেন ,আমি এবার ৬ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি । ধান মোটা মোটি ভালো হয়েছে। এখানে ধান চাষ করতে তেমন কোন খরচ হয়না। এখানের মাটিতে পলি পড়ার কারণে দেখা যায় যা লাগাবে তাই ভালো হবে।আমাদের ধানে এখানে তেমন কোন সার প্রয়োগ করতে হয়না এবং শ্রমিক অনেক কম লাগে। তাই এখানে চাষাবাদ করে আমরা লাভবান হই। আমরা প্রতি বিঘা জমিতে ধান পাবো ১৭ থেকে ১৮ মণ। 

চরে ঘুরতে আসা সুজানগর প্রেসক্লাবের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) শাহজাহান আলী বলেন চরের উপর গেলে ভালো লাগে।আমি যখন সময় পাই তখনি এদিকে ঘুরতে আসি।

সুজানগর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম এ আলিম রিপন বলেন সুজানগরের পদ্মা নদীর মাঝখানে চর জাগছে চরে দাঁড়ালে মনে হয় সমুদ্বরের বেলা ভুমি। এবং ছোট ছোট পাখি আছে উড়ে বেড়ায় সেগুলো দেখতে ভাললাগে। চরের উপর নানা রকম ফসল ও সবজি চাষের কারণে চারদিকে এখন সবুজ আর সবুজ। এই প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতেও অনেক ভালো লাগে তাই এখানে মাঝে মাঝে আসি।

সুজানগর উপ সহকারী কৃষি অফিসার সাইদুল ইসলাম জানান এবারে সুজানগর উপজেলায় ২৮০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সুজানগর উপজেলা কৃষি অফিসার ময়নুল হক সরকার বলেন,বর্ষা মৌসুমে তো ডুবে থাকে আর এই মৌসুমে চর জাগে তাই সেখানে প্রচুর চিনা বাদাম হয়। এক মৌসুমে পানিতে ডুবে থাকার কারণে দেখা যায় মাটিতে পলি পড়ে জমি উর্বর হয়। তার কারণে কৃষকদের খরচ কম হয় ফসলও ভালো হয়। তবে পদ্মার পানি যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তা যদি অব্যাহত থাকে তা হলে বড় ধরণের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে এ অঞ্চলের কৃষকেরা।

No comments

Powered by Blogger.